কৌশিকী কানাড়া

ছেলেটি বাঁশি বাজায় করুণ সুরে ।
কখনও ভৈরবী, কখনও বেহাগ কিংবা
                       কলাবতী, খাম্বাজ
হয়তো ওঠেনি তখন ভোরের সূর্য
হয়তোবা নিঃশব্দ নিশুতি রাতে -
ঘুম ঢুলুঢুলু চোখে অসংখ্য তারারা
কান পেতে শোনে আর প্রহরা দেয়
                            দৈত্যের ভয়ে -
 অগুনতি রাত্রি জাগে ভোরের বন্দনায়
ছেলেটি বাঁশি বাজায় মগ্ন হৃদয়ে ।

দূর পাহাড়ের গায়ে গহীন জঙ্গল
শহর থেকে যোজন যোজন পথ দূরে -
কোন এক চিত্রা হরিণী বা সম্বর হরিণ
চকিতে চমকে দাঁড়ায় মুখখানি তুলে
ছলছল চোখ জোড়া অনন্ত মায়াবী
"কে তুমি দরদী বাজাও", শুধায় সারঙ্গ ।
জোনাকিরা চুপচাপ, ব্যাঙ ডাকা রাত 
একটা তীক্ষ্ণ তীর বা বিষাক্ত কার্তুজে
অন্ধ অন্ধকার চিরে করুণ আর্তনাদ -
ফিনকি ছোটা রক্তে ভাসে 
             শ্যামল সতেজ সবুজ ঘাস
ওখানেই মৃত্যু হয় দরদী হরিণীর ।

 জলে জঙ্গলে জনস্রোতে নিরীহরা মরে
 সে তো কালের নিয়ম, মিথ্যা ব্যতিক্রম 
যুযুমান যোদ্ধারা সেই ধর্ম রক্ষা করে -
হামাস, আফগানিস্তান বা ইউক্রেনের পাহাড় -
বারুদের গন্ধ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তরে ।
হামলে পড়া হায়নাদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা 
কে হাসে, কে কাঁদে তার হিসাব কেন চাই ?
পাহাড়ের কোলে কাঁদে শুধু হরিণী শাবক -
বাঁশি তবু থামে না, না মানে মানা,
স্বজন হারানো বাঁশিতে তখন কৌশিকী কানাড়া  ।


(গতি পত্রিকায় দেওয়া)

বই - আমার না বলা কথা 

Comments