কাল সন্ধ্যায় যে জল পাতা ছুঁয়ে ছিল
আজ ঘুম ভাঙতেই হাঁটু আঁকড়ে আছে ।
তার কালো ঘোলাটে গায়ে অদ্ভুত গন্ধ -
আমি চাই না তবু ঘরে থাকা দায় ।

এ'পাড়ায় যে দশটা ঘর একটু টান আছে
আমি নিজে যেচেই তাদের‌ই একজন ।
আর সব ঝুপড়ি আর নিচু ঘরের ভীড়ে
                             আমরা কুলিন ।
পাড়ায় অনুষ্ঠানাদিতে আলাদা কুর্শি জোটে,
যদিও আমার বাড়িতে ওদের জল চল নেই ।
বাড়িতে যখন নেতা মন্ত্রীরা আসেন
ওরা দূর থেকে দেখে আর পথ ছেড়ে দাঁড়ায় ।
বলতে নেই তবু ওরাই আমার প্রতিবেশী ।

আজ তিনদিন জল বন্দি আছি
পাড়ায় এখন উৎসবের মেজাজ ।
জাল নিয়ে ছেলে বৌ বেরিয়ে পড়েছে পথে -
কারো খালি গা, কারো শাড়িটাই ছেঁড়া ।
আমি ওদের অনেকেরই নাম জানিনা
ওরা প্রত্যেকেই আমাকে চেনে কাছ থেকে ।

একটু আগে একটা নৌকা ত্রাণ দিয়ে গেল
আমাকেও দিয়ে গেছে বড় একটা প্যাকেট -
অনেক কিছু আছে, চাল ডাল তেল সব -
না নিয়ে উপায় ছিল না, খাবার জল শেষ ।
বিভৎস কালো জলটা টেনে এনেছে মাটিতে,
এখন আমি আর ওরা - এক‌ই পংতিতে ।

আজকাল দিনরাত্রি প্রচন্ড আতঙ্কেতে থাকি ।
যদি মনের মধ্যে এমনি একটা বন্যা আসে কখনো,
আনাচে কানাচে, নালা, নর্দমায় জমে থাকা
সমস্ত পুঁজ, রক্ত, বর্জ্য ধুয়ে নেয় একবার, তখন ?
আমি তখন আগের মতই শ্বাস নিতে পারবো তো ?
কী নিয়ে যে বাঁচবো - আমি সত্যি জানিনা !

Comments