যীশু

আমার কুমারী মনের গুপ্ত কোনে
যে ছেলেটির জন্ম হয়েছিল একদিন,
তোমরা তাকে ভালবাসা, প্রেম
                    যে নামেতেই ডাকো --
আমি তার আদর করে 
           নাম রেখেছি যীশু।
আমার কালো বুক আলো করে
                       সেই ছোট্ট শিশু 
একদিন কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে।
আমাকে সে শিখিয়েছে
                       এক অপরূপ মন্ত্র।
তার‌ই‌ পরামর্শতে, এক টুকরো রুটি 
ভাগ করে খেয়েছিলাম, রুটি হয়েছিল অমৃত,
সেও অনেকদিন।
আমাকে সে শিখিয়েছে 
          জীবন আসলে কী।

লোকে তাকে ভালবেসে রব্বি নামেও ডাকে।
পন্টিয়াস পিলাতের আদেশে যখন
সেই ঈশা মশিকে টেনে হিঁচড়ে
ক্রুশবিদ্ধ করেছিল কিছু লোক
আমার বুকে তখন কান্নায় আগ্নেয়গিরি
মুহুর্মুহু আগুন যেন আকাশ ছুঁতে চায়।

ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত ছেলেটার গায়ে, বুকে পিঠে
অসংখ্য পেরেক গাঁথা
ঝুলে আছে শূন্যে, মাথায় কাঁটার মুকুট
রক্ত ঝরছে প্রতিটি রোমকূপ থেকে
তবু কী প্রশান্ত দৃষ্টি, যেন ডেকে ডেকে বলতে চায়
ক্ষমা --, ক্ষমা --, ক্ষমা --, 
ক্ষমার চেয়ে বড় কিছু নেই।
" উহাদের ক্ষমা করে দিও"। বলেছিল
আমার কুমারী মনে জন্ম নেওয়া 
                         সেই ছোট্ট যীশু।
তোমরা তাকে ভালবাসা বা প্রেম‌ও বলতে পারো।

একদিন শনিবার সন্ধ্যায়
তিমাথায় মোড়ে যীশু ছিল দাঁড়িয়ে,
আরো কিছু বন্ধু সাথে ছিল,
কোথায় যেন খেলা চলছে ‌‌দুটো দলের মধ্যে
কারা যেন জিতলো আজ --
                   কারা হেরে গেছে --
তুমুল তর্ক -- লাঠালাঠি প্রায়,
একদিকে খর্গ, আর অন্যদিকে তরোয়াল
দুটো দল হঠাৎই দুদিক থেকে এলো,
এলোপাথাড়ি অস্ত্র চললো বাতাসে
পৈচাশিক আক্রোশ আর মর্মভেদী চিৎকার --
ভয়ে রাস্তার নেড়ি কুত্তারা কাঁদতে ভুলে গেছে।
পরে শুনেছি দাঙ্গা লেগেছিল।    

পুলিশ এসেছিল, এম্ব্যুলেন্স, মন্ত্রী, মেজিস্ট্রেট
কথার পিঠে কথা অনেক, বাদানুবাদ ,
মিটিং, মিছিল হলো।
বরাতজোরে যীশুরা আমার মরেনি সেদিন কিন্তু,
মরে যাওয়াই উচিত ছিল তাদের।
তোমাকেও বলিহারি দেই ঈশ্বর
দাঙ্গাবাজদের হুশ দিচ্ছ তুমি ?
ওরাও যদি ভুল করে মানুষ হয়ে যায় !


Comments