বিভ্রম

বাড়ির উঠোন আগাছায় ভরে গেছে,
চলার আর উপায় নেই।
সব গাছ ভালো করে চিনি না যদিও,
কেটে ফেলি তেমন মনের জোর কোথায় ?
গুরু আদেশ দিয়েছিলেন, - "হে প্রিয় শিষ্যগণ,
এই আশ্চর্য পৃথিবীতে ততধিক আশ্চর্য 
একটি উদ্ভিদ, চারা বা গাছ,
পৃথিবীর বুকে যে একেবারেই মূল্যহীন মাত্র -
তেমনি একটি উপহার চাই,
কে আছো প্রিয়, এনে দিতে পারো আমায় ?"
নানা জনে নানা গাছ উপহার আনেন,
শিষ্য জীবক‌ও প্রণাম করে অরণ্যেতে গেলেন।
একে একে স্পর্শ করলেন, প্রতিটি প্রাণ;
মনে হলো এনয়, এনয় তার কাঙ্খিত বস্তু,
এই গাছ, ওই গাছ, সমস্ত জঙ্গল তন্ন তন্ন খোঁজেন -- 
গোটা দিন কাটে -- তবু শূণ্য মনোরথ,
ক্লান্ত জীবক শূণ্য হাত, ভারাক্রান্ত মন।
গল্পটা পৌরাণিক বটে, সত্য ষোল‌আনা,
বাবা বলেছিলেন, একদিন ডেকে।
আজ বাবা নেই, আগাছায় ভরে গেছে উঠোন,
আমি দেখি আর নিশ্চুপ থাকি,
সাজানো গোলাপ বাগান, 
                      নষ্ট হলো প্রায়, তবুও -----।

চারিদিকে এত শব্দ, নানা আকার, নানা মাত্রায়,
আপনারা সবাই শুনতে পান নিশ্চয়ই।
সুর আর অসুরের ভৈরব নৃত্য,
মাঝে মাঝে ক্লান্ত হয়ে পড়ি।
শাস্ত্রে আছে শব্দ নাকি ব্রহ্ম সম হয়,
              অসীম শক্তিধরে।
প্রতিদিন তাই, অন্যায়, অবিচারে অবিচল থাকি,
নীরব, নিশ্চুপ --, পাছে 'ব্রহ্মশক্তি'র অপচয় ঘটে !

খবরের জঞ্জালে খবর নিখোঁজ,
এখন এটাই বাজারে সত্যিকারের খবর।
সালংকারা দেবদাসী যারা
সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে অপেক্ষায়,
কেউই তারা, জেনে নিন প্রেমিকা নন,
রাজ পুরোহিতের অভিপ্রায়ে অবস্থান মাত্র।
কথাগুলো অন্যকোন কারণে নয়
পথিকের ভ্রম হতে পারে, তাই বলে দেওয়া,
সবাইতো রাজ পুরোহিত নন।



Comments