পম্পীরে


হরিবোল বোলহরি, হরিবোল বোলকরি
পম্পী----, ও পম্পী রে
সেই যে মাগো শুনিয়ে গেলি
কালীপূজার ভাসান যাবি,
ভাসান তো মা কখন সেই শেষ 
তুই রে মাগো কোথায় গেলি ?
ঢাকের বাদ্যি শুনি নাতো
কিসের এতো লোকের ভীড় 
কোথায় গেলি মারে আমার 
এবার তো মা ঘরে ফির।
গলির মুখে আলোটা রাখ 
আমার মেয়ে যে ফিরছে না,
এদিক ওদিক খবর নে না
মায়ের মন যে মানছে না ।

হরিবোল বোলহরি, হরিবোল বোলহরি
ও পম্পী রে----
আবীর মেখে সেজেছিলি 
খোঁপায় ছিল একটা ফুল ;
কোথায় পেলি এত ফুল মা 
কে আছিস রে মুখটা তোল।
এত করে ডাকছি গো মা
ওঠ রে মা, কথা বল, 
ওঠোনেতে শুতে নেই মা 
এবার তো মা ঘরে চল ।
অমন করে শুতে নেই রে
মন্দ লোকে মন্দ কয়
আমায় একটু দেখতে দাও গো
ওযে আমার মেয়ে হয়।
আলোটাকে সরিয়ে রাখ
চোখে আলো সয় না ,
সেই যে মেয়েটা শুয়ে আছে
একটি কথাও কয় না।

হরিবোল বোলহরি, হরিবোল বোলহরি
ও পম্পী ----
ভাসান তো হয় শোকের মিছিল
কিসের এত নাচের দল ?
এখন আমি কোথায় যাই মা
কি নিয়ে আর বাঁচি বল?
একটু খানি সবুর কর রে,
এত কিসের হুড়োহুড়ি
আমার বুকের পাঁজরটাকে
একটু বুকে চেপে ধরি ।
আলোটাকে তুলে ধর 
ঝাপসা কেন দুটো চোখ,
ফুলের মত মেয়ে যে আমার 
আমার কপাল যমের হোক।
আলোটাকে  জ্বালাস নারে
আঁধার থাকুক আমার ঘর,
আলোর ছটা কেড়ে নিয়েছে
কালী মায়ের ভাসান ঝড়।

হরিবোল বোলহরি, হরিবোল বোলহরি
মারে-----
যাবার সময়ে বলেছিলি
"মাগো আমি এবার যাই ",
কত করে বলছি তোকে
অমন কথা বলতে নাই ।
সেই যে মাগো চলে গেলি
আর তো তুই ফিরলি না,
এত তোকে নিষেধ সত্বেও 
আমার কথা শুনলি না।
খাবার টেবিল- বসে আছি 
সামনে নিয়ে ভাতের থালি
ঝাপসা চোখে তাকিয়ে দেখি 
পাশের চেয়ার শুন্য, খালি
মোচড় দিয়ে উঠে রে বুকে
উথাল পাতাল যন্ত্রণা 
ভাতের থালি, বিষের থালি 
কে দেয় কাকে সান্ত্বনা ।
ওরে আলোটাকে জ্বালাস নারে 
ঘর যে আমার আঁধার থাক
আমার প্রদীপ নিভিয়ে গেছে
অভিশপ্ত অভাগা ট্রাক।

হরিবোল বোলহরি, হরিবোল বোলহরি
পম্পী যে, ও পম্পী----
হরিবোল বোলহরি হরিবোল বোলহরি।।

Comments