মাঝে মাঝেই যখন একা থাকি
হয়তো কোন এক জনসমুদ্রে ,
কিংবা স্টাডি রুমে বা বিষন্ন বারান্দায় ---
আমারই মধ্যে খুঁজি সেই আমিটাকে,
বড় অবাক লাগে জানো,
নিজেকে ঠিক চিনতে পারি না ।
বড় বিস্ময়, ভয় আর বিপন্নতাবোধ জাগে --
মনে হয় আমি কেন আমি হতে পারি না ?
চিরকাল জানি আমি খেতে ভালবাসি,
ফাস্টফুড, ফুচকা, ভাজা বড়া সব।
মনে মনে ভাবি আমি যদি না খাই
ঔষধি দোকানেতো বিকি থাকা চাই?
আবার চারপাশে যখন দেখি এত রোগ শোক
ভয় হয়, রীতিমত ভয় হয় খেতে;
ভাবি কি লাভ? কি লাভ এইসব ছাইপাশ খেয়ে?
পরদিন সকালে আবার সেই এক,
আবার ফুচকা খাওয়া, আবার বিবেক।
মাঝে মাঝে সত্যিই
আমার আমিটাকে জানো চেনা বড় দায় ।
ঠাকুর ঘরেতে গেলে আমার বৈরাগ্য হয়
মনে হয়, জীবনের এই শেষ কথা ।
আমি কে ? কে আমার?
কার জন্য ভেবে ভেবে করি দিনপাত ?
কি কাজ করতে পারি, কি ক্ষমতা আছে আমার ?
কার মোহে সকাল সন্ধ্যা করি মুন্ডুপাত?
সেই আমি পুজা শেষে প্রণামের পর
ধুপকাটি বুজিয়ে করি খানিক সঞ্চয় ।
ভারী বিস্ময় । বন্ধু, ভারী বিস্ময় ।
যখন কাজে থাকি, বেশ ভালো আছি,
সময়ের চোরাস্রোত ঢাকে কাজের একাগ্রতা,
নিজেকে খুব হালকা মনে হয়।
ক্রমাগত ছুটতে থাকি আসুরিক গতিতে,
অতিক্রম করি একের পর এক মাইলস্টোন
তবু প্রতিদিন প্রত্যুষে যখন দেখি আমার কর্মক্ষেত্র
দেখি পাহাড় সেই সুউচ্চে আছে , আমি পাদদেশে ।
আনন্দ হয়, তথাপি ভালো লাগে ভাবতে --
নিজেকে ছুটতে দেখে, মনে হয়, এইতো জীবন ।
আবার সেই আমিই শ্মশাণে শবদাহে যখন,
সমুখে দাউদাউ চিতা, রক্তিম মুখে আমি শুষ্ক নয়ন,
মনে হয় নিজেকে শ্রেষ্ঠ নির্বোধ ।
নিজের মূর্খতা আর অহং এর মায়ায়
আরো একটা জীবন বুঝি বৃথা চলে যায় ।
হিসাবের খাতা জ্বলে, হুতাশন হাসে
সাফল্য উল্কি যেন উড়ে উল্লাসে দিগন্ত আকাশে ।
আমি ক্ষেপা খুঁজে যাই সেই আমিটাকে
ভস্ম শুধু ভারী হয় হতাশে, আর দীর্ঘশ্বাসে ।
Comments
Post a Comment