প্রতিশ্রুতি

বাড়ি ছেড়ে বেরোবার ঠিক আগে
পিছন ফিরে দেখেছিলাম একবার শুধু ।
আমার ছত্রিশ বছরের সাথী স্ত্রী
ছলছল চোখে দাঁড়িয়ে অলিন্দে
খোলা চোখে তার ঘোলাটে দৃষ্টি,
একমাত্র মেয়েটি, ঠিক তার পাশেই।
মন খারাপ করা দৃশ্যপটে
           আমার এই যাত্রা যে অনিবার্য ।

এই বাড়িটি অনেক কষ্টে তৈরি
ধার দেনা আর পি এফের টাকায় ।
যদিও অনেকটাই তার শোধ হয়ে গেছে
এখনো নকুল দানার মতো ছিটেফোঁটা বাকি ।
তবে শেষ হয়ে যাবে সেই ব্যবস্থা আছে,
আর ঠিক এই কারণেই কিছুটা স্বস্তি ।

সাধের গোলাপ বাগান দু'জনে গড়েছিলাম
সবমিলিয়ে মোট আটটি রঙের বাহার,
ডাগর ডাগর ফুল ফুটেছে তাতে।
আড়চোখে দেখতে পেলাম নুইয়ে পড়েছে মাথা
ওখানেও বিষাদের ছায়া।
তবু আমাকে যে যেতেই হবে।

আলের পথে যেতে যেতে দেখি
হেমন্তের ধান কাটা শেষ, রুক্ষ পরিবেশে
দিগন্ত জুড়ে স্বজন হারানোর শোক ।
সমস্ত আঁচল জুড়ে অসংখ্য অপ্রাপ্তি
তবু আশ্চর্য মমত্ববোধ এই মাটিতে।
একটা সর্বহারা নেংটা ছেলে
পিছন পিছন ছুটে এসে বললে,
তুমি নিষ্ঠুর --, তুমি যেও না ---
আমি বললাম, ধুর বোকা,
আমি কি চলে যাচ্ছি একেবারের জন্যে ?
আবারো আসছি ফিরে এই মাটিতেই,
তুই দেখে নিস !

Comments