ধোঁয়াশা

কেমন আছো তুমি ?
আজ অনেকদিন পর আবার
তোমার আমার মুখোমুখি কথা ।
ভালো আছো তো ?

দেখতে দেখতে দিন কেটে গেল দেখো।
মনে হয় এইতো সেদিন --
তখন‌ও তোমার বিয়ে হয়নি ।
আগামীকাল তোমার মেয়ের‌ই
বিয়ের পাকা দেখা।
দিনগুলো সব বুড়িয়ে গেল
নিজের অজান্তেই, তাই না ?

তুমি কিন্তু আগের মতোই আছো
বয়েসের ভারে একটুখানি মোটা,
ভালোই লাগে বেশ
কেমন একটা গিন্নী গিন্নী ভাব।
ঠোঁটে তোমার তেমনি আছে
দুষ্টু হাসির রেশ
এখনও সেই শব্দ করে হাসি
হাসলে পরেই টোল খায় গালে ।
ঠিক আগের মতই ।

এই সময়টাই ফাঁকা থাকো তুমি।
তোমার বরের এখনো দশটা পাঁচটা অফিস,
আমার যে ওসব পালা শেষ !
সারাদিন অফুরন্ত সময়
কম্পিউটারের মাউস ছেড়ে মোবাইল নিয়েছি, 
ইচ্ছে মতন যখন খুশি গল্প করে কাটাই।
তোমাকেও ফোন করতে পারি ।
ছেলেমেয়েরা এসময়ে ঘরে থাকে না জানি,
আর থাকলেই বা, বাহানা করে 
                              ছাদে চলে যাবে
সে বিশ্বাস আমার আছে ।
তবু ইচ্ছে করেই ওপথ মাড়াই না,
সবাই তো আর সব কিছু 
                    বুঝতে পারে না বলো ?

তোমার আমার সম্পর্কটা বড় অদ্ভুত
তোমার সব খবর রাখি আমি,
সুগারটা বাড়লো কিনা,
প্রেশারটা কেমন আছে -- সব ।
তুমিও তেমনি আড়াল থেকে 
                         লক্ষ্য করো আমায় ।
ফেসবুকে বন্ধু ন‌ও, তবু
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ো আমার সবকটা লেখা
বুঝতে দাও না যদিও,
আমি কিন্তু বুঝতে পারি সব।
গতমাসে তোমার জন্মদিন ছিল
ইচ্ছে ছিল, ওয়াটস‌আপে 
                  ‌‌ একটু উইশ করি --
 করিনি কিছুই
আমার নম্বর তোমার প্রান্তে ব্লক করা জানি,
পাছে তোমার আমার সাজানো সংসার
তাসের ঘর হয়।
আমি তাই ওই দিনেই কবিতা লিখেছিলাম,
                   তোমার উদ্দেশ্যে।
শরীর ছাড়াও আরও একটা সম্পর্ক হয়,
সবাই সেটা বুঝতে পারে না।
রবীন্দ্রনাথের'শেষের কবিতা' সবার জন্য নয়।

আজ আমাদের বিশেষ দিন,
                  মনে আছে তো ?
আমাদের 'উহ্য'তম বিচ্ছেদবার্ষিকী।
ইচ্ছে করেই 'উহ্য'তম বললাম
অর্বাচীনের চোখ জুড়ে ধোঁয়াশা থাক।

Comments