ইমোজি

ইমোজি

সকাল থেকেই মোবাইল হাতে --
কখন একটা টুক করে শব্দ হবে
পর্দায় ভেসে উঠবে তোমার পাঠানো
একটু হাসির ঝিলিক, একটা ইমোজি।
আমি অপেক্ষায় থাকি।
প্রতিটি মুহূর্ত এক একটা যুগ যেন,
মনে হয় আজ বুঝি তুমিও গেলে,
আর বুঝি তোমার মনে আমার স্থান নেই ।
একটা ভয় আমাকে গ্রাস করে প্রতিদিন।
এই সবটাই আমার ইদানিং শুরু।

একটা দিন ছিল খুব বিরক্ত লাগতো ,
রোজ সকালে একগাদা শুভেচ্ছা
এক‌ই ছবিই নানা হাত ঘুরে ফিরে আসে
কোন নতুনত্ব নেই।
দু-তিন দিন পরপর‌ই হ্যাং হয়ে যায় মোবাইল।
কাজের কথা মনে হতো
অকাজেই হারিয়ে যাচ্ছে সব।
কত মিটিং আড্ডায় গর্ব করে বলেছি
" দয়া করে উইশ করবেন না, প্লিজ ---
পছন্দ করি না ". তুমি শুধু হাসতে নীরবে।
একটার পর একটা স্তুপীকৃত হতো বার্তা
ইচ্ছে করেই খুলেও দেখতাম না আমি
ইচ্ছাকৃত উপেক্ষা এক নিষ্ফলা আক্রোশে ।
তখন বুদ্ধিভ্রষ্ট ছিলাম,
জীবন ছিল ব্যস্ত নদীর মতো।

এখন এই নিঃসঙ্গতায় ,শারীরিক দূরত্বের সাথে 
মনের দূরত্ব‌ও বেড়ে গেছে অনেক।
কারো বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে না আজকাল
মনে হয় বিব্রত করা হবে,
আবার বাড়িতেও কাউকে ডাকি না আমি
অজানা ভয় চোরাবালির মতো কাজ করে।
সবটাই একান্ত আমার অনুভূতি।

প্রথম প্রথম ফোন আসতো অনেক, 
একটা কৌতুহল, উৎকণ্ঠা আর
মুঠোফোনে খুশীর বিনিময়।
এখন চলছে পালা বদলের পালা
সবটাই বিষাদমাখা।
এখন কেউই ফোন করে না আমায়,
কি জানি অবাঞ্ছিত কোন দায়িত্ব
 কাঁধে চেপে বসে !
একমাত্র তোমরা ক'জন‌ই আলাদা।
এই দুঃসময়ে প্রতিদিন নিয়ম করে
আমার মঙ্গল কামনা করো -- শুভেচ্ছা জানাও --
নিজের সমস্ত যন্ত্রণা চেপে এই যে কামনা --
এতদিন বুঝতে পারিনি জানো,
এখন উপলব্ধি করি মর্মে মর্মে ।
এখন বুঝি তুমি বা তোমরাই 
আমার জীবনে সত্যিকারের বন্ধু,
আমার জলসা ঘরে আলোক উজ্জ্বল ঝাড়বাতি।
ভালো থেকো বন্ধু।

সুপ্রদীপ দত্তরায়

Comments