খেতে বলছিস বন্ধু ? এই কোরোনায় ?
খেতে পারবো বল ?
আজকাল যে নিমন্ত্রণ, আনন্দ নয় রে,
আতংক,
প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু ভয়ে কাঁপছি --
কি জানি কখন বুঝি কোরোনা আমার হয়।
যতটা আমি তার অনেক বেশি পরিবার,
চব্বিশ ঘণ্টায় ছত্রিশবার, -- ওয়ার্নিং,
যেন আমার জন্যেই সমস্ত গন্ডগোল।
জীবনটাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেছি
আতংকের শেষ সীমানায়।
তুই আমায় খেতে বলছিস বন্ধু ?
খেতে কি পারবো বল ?
তুই জানিস না,
প্রতি দশ মিনিট অন্তর অন্তর
হাত ধুই, সাবান ঘষি,
খালি চোখে দেখি না তবুও
বারবার হাতটাকে উল্টে পাল্টে দেখি
ভুলেও কোথাও কোরোনা লেগেছে কিনা ।
চেয়ারে বসতে পারি না, ভয়,
অফিস আদালত কবেই ছেড়েছি
বাইরে বেরোই না, মাস্ক পড়েও ।
কেউ পাশে এলে আঁতকে উঠি,
কি জানি ছোঁয়া লেগে যায়।
বাজার যেতে হলে যাই দুপুরে,
বাছাই শেষে পড়ে থাকা সব
শুকনো শাক সবজি কিনি চড়া দামে,
তবু সকালবেলা ভীড়ের মধ্যে
যেতে ভীষণ ভয়।
কি জানি কোরোনা হয় !
বন্ধু সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছি,
মিশনেও যাই না,
যা একটু মর্নিং ওয়াক ছিল প্রথম দিকে
কন্টেইমেন্ট জোনের ঠেলায়
তা-ও এখন বন্ধ।
একা একা বাড়িতে বসে মৃত্যুর প্রহর গুনি।
নিঃশব্দে, বোবা কান্নায়।
সময় কাটতে চায় না,
টিভি মোবাইলে অরুচি হয়ে গেছে
"আমাকে দেখো, আর জ্ঞান ছড়ানোর প্রতিযোগিতা,"
আমি কাউকে দোষ দিই না বন্ধু,
আমার মতো সবাই তারা
আতংকে আর ডিপ্রেশনে, তলানিতে।
বেঁচে থাকার খোরাক যদি খড়কুটো হয়,
তাকেই আঁকড়ে ধরতে চায় বিশ্বাসে।
ওদের আমি দোষ দিই না বন্ধু
আমরা যে পৃথিবীর শেষ সীমানায় দাঁড়িয়ে।
তুই আমায় খেতে বলছিস বন্ধু ?
খেতে কি পারবো বল ?
কি ভাবছিস ?
এত শত শোনে তুই হয়তো বলবি এবার,
"তবে থাক, অন্য কোন বার, কোন এক সময় --"
না, না বন্ধু তা কি কখনো হয় ?
এত করে বলছিস, না এসে পারি ?
তাছাড়া "মাছপরশ" যে নিয়ম মেনে হয়,
চাইলেই তো সে কি আর
যখন খুশি ডাকতে পারবি তুই ?
Comments
Post a Comment