লকডাউন
এই লকডাউনে একটা ভিডিও
খুব ভাইরাল হয়েছে আজকাল,
নাম গোত্রের বালাই নাই
কে লিখলেন, গলাটা কার, কিচ্ছু জানা নেই।
শুধু একটা বক্তব্য, লকডাউনের একশো বিশদিন।
আপনি দেখেছেন ? দেখেননিতো ?
দেখবেন না, কেউ দেখবেন না,
যদি কেউ দেখে থাকেন,
শেয়ার করবেন না প্লিজ।
একটা বাস্তব ভবিষ্যতের ভয়ঙ্কর ছবি।
ভাবলে গা গুলিয়ে আসে,
ঘুমুতে পারবেন না রাতে ভয়ে, আতঙ্কে
চিৎকার করত পারেন মধ্যরাতে,
আপনার চিৎকারে ভয়ে পালিয়ে যাবে
কার্নিসে বসা রাতের লক্ষী পেঁচাটি।
হাতের ওই মোবাইলটি,
যে বস্তুটি হাতের তালু ছুঁলেই
আপনার বাহাদুরি বেড়ে যায় একশো গুণ,
ওইটা আর চলবে না বেশিদিন।
অধিকাংশ সময়ই যে লোডশেডিং।
একবার যদি লাইন খারাপ হয়ে যায়,
হয়ে গেল ব্যাস, ঠিক হবে না কোনদিন।
কাজের লোক কোথায় ?
কে আসবে আপনার ঘরে বাতি জ্বালাতে ?
আসবে না, দেখবেন কেউ আসবে না।
যে দাদাটি আজ পোষ্টটা দিলেন
বারোশো টাকায় কচি পাঁঠার মাংস,
আহারে, উনি সত্যি বুদ্ধিমান।
উনি ভালো করেই জানেন, বেশি দিন নেই আর
দুবেলা সেদ্ধভাত জুটবে কিনা সন্দেহ।
কোথায় পাবেন খাবার ? কে দেবে আপনাকে ?
লোক কোথায় এই সংসারে ?
পকেটে অনেক টাকা ?
সঞ্চয় করেছেন খাবার ? কতটা ?
কতটা জায়গা আছে আপনার ঘরে ?
লুটও হতে পারে কিন্তু !
যারা উৎসাহ নিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে খাবার,
বেশি দিন নেই, তারাও আর আসবে না।
আসতে পারবে না কেউ।
ডাঙায় দাঁড়িয়ে কঞ্চি বাড়িয়ে দেওয়া সহজ
জলে নেমে লোক বাঁচাতে কজন পারে বলুন ?
ডাক্তাররা যারা সেবায় ব্যস্ত, সব অসুস্থ,
কিছু নার্স চালিয়ে যাচ্ছে কাজ
হোটেলগুলোকে হাসপাতাল বানানো হয়েছিল
এখন তাতেও জায়গা হচ্ছে না আর,
রোগী গুলো শ্বাসকষ্টে ছটপট করছে অথচ
ঔষধ এগিয়ে দেবার লোক নেই যে খুব।
এটিএমে টাকা নেই, শেষ, ব্যাঙ্কগুলো বন্ধ
শাটার খোলবে লোক পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও,
টাকা দেবে কে আপনাকে ?
হ্যাঁ, সবটাই সত্যি ।
আগামীতে লকডাউন হয়তো থাকবে না,
কিন্তু লোক থাকবে কি রাস্তায় ?
আপনি বেড়োবেন ?
লকডাউন কথাটা বলার মতই
লোক থাকবে না কেউ।
যারা বেঁচে থাকবে, তারা রাস্তায় নাববে না কখনো,
এই যে এত বাস, গাড়ি, অটো, স্কুটার
কিচ্ছু চলবে না তখন।
পাম্পে লোক আছে কি ?
আপনার গাড়ির জন্য তেল ?
কে দেবে দোকান খুলে ঔষধ ?
প্রাণের মায়া নেই ?
আপনিতো নিজেই বেড়োবেন না ভয়ে,
ঘরের দরজা টেনে
নিজের ছায়া দেখে আঁতকে উঠবেন তখন।
নিজের স্ত্রী পাশে এলে চিৎকার করে উঠবেন,
তফাৎ যাও, তফাৎ যাও এখান থেকে।
তখন আপনি সত্যি ভয় পাবেন।
কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেল যে।
আপনার নিজের ছেলে, আত্মজ,
কোলে পিঠে করে যাকে মানুষ করেছেন,
দুর থেকে আপনাকে ছুঁড়ে দেবে ভাতের থালাটা
যদি সে ভালো নয়, খুব ভালো হয় । নইলে ?
একবার বলে দেখুন,
আপনার সর্দি, কাঁশি কিংবা জ্বর
ছুড়ে ফেলে দেবে ঘর থেকে
তাড়িয়ে দেবে, দেখে নিবেন ।
ওকেও যে বাঁচতে হবে,
ওর পরিবারইবা মানবে কেন?
আপনি তখন পরিবারের কেউ না। বিশ্বাস রাখুন,
মিথ্যে না, একদম সত্যি কথা।
কথাগুলো মিলিয়ে নিবেন অক্ষরে অক্ষরে।
দেখলেন তো টিভির পর্দায়,
অসুস্থ হয়েছিল লোকটা, মারণ ব্যাধিতে
খবর পেতেই সবাই সরে গেছে,
মারা গেছে, তবু কেউ আসেনি বাড়িতে।
কেন ? না, মৃত্যুভয়, মৃত্যুভয় তাড়া করছে যে।
চার মেয়ে কাঁধ দিয়েছে তার।
কাঁধ দেবার লোক ছিল না সেদিন।
দেখেছেন তো ? সবটাই টিভিতে দেখিয়েছে।
আপনি কিন্তু তাও পাবেন না জানেন ?
ঘরে মরে পচে দুর্গন্ধ ছড়াবেন
কিন্তু আগুন দেবার লোক পাবেন না কোথাও।
মিলিয়ে নেবেন কথাগুলো ।
একদমই সত্যি ভিডিওটা।
আমি দেখেছি তাই বলছি আপনাকে,
তাই রাত জেগে জেগে আপনাকে সাবধান করছি মাত্র।
কারণ ----,
আপনার জন্য আমাদের সবার যে বিপদ।
কাল সকাল থেকে একটিবার ভেবে দেখবেন --
এবার থেকে নগরকির্তনে যাচ্ছেন কিনা,
তাবলিগ থেকে ফেরৎ জামাতাকে
লুকিয়ে রাখা সঠিক কিনা,
মৌলবিসাহেবরা যা বলছেন কতটা সত্যি
যুক্তি দিয়ে, বিদ্যা দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে বিচার করুন
সবাইতো আর শত্রু হয় না,
সারা দেশাটা মূর্খ না,
আপনার প্রতিবেশী, বন্ধু বান্ধব
প্রশাসন সরকার সবাই ? তবে ?
ভেবে দেখবেন একবার। আমার জন্যে না
আপনারাই জন্য, প্লিজ একবার।
সুপ্রদীপ দত্তরায়
Comments
Post a Comment