স্টেশন রবীন্দ্র সরোবর

ভেবেছিলাম ঘটনাটি চেপে যাই, বলতে নিজেরও অস্বস্তি বোধ হচ্ছে, তবু বাড়িতে পরামর্শক্রমে অবশেষে সবার সাথে শেয়ার করাটাই শ্রেয় মনে করছি। খুব বেশি দিনের পুরনো কথা নয়, এই মাস দুয়েক আগের কথা , আমি অফিসের কাজে কলকাতা গেছি, দুদিন থাকবো । আমি সাধারণত ওখানে গেলে নাগেরবাজার মতিঝিল থাকি। আগে বাগুইআটি থাকতাম, ওটা আমার মাসীর বাড়ি, ইদানিং মাসতুতো বোনের বাড়িতে উঠি । হোটেলেও থাকা যায়, কিন্তু থাকি না। আসলে এই সুবাদে ওদের সাথেও দেখা সাক্ষাত হয়ে যায়। সে যাক, গত মে মাসের বারো তারিখ সম্ভবত আমি অফিসের কাজে কলকাতা গেছি । আমার হেড অফিসে পরদিন একদিনের কাজ , তারপর দিন আমার আবার শিলচর ফেরার কথা। যেদিন গেলাম, ওই দিনটা মাসতুতো বোনের সাথে কাছে পিঠে দেখা সাক্ষাত আর টুকিটাকি কেনাকাটাতেই কেটে গেল । কলকাতাতে আমার পরিচিত অনেকেই থাকেন -- আমার দিদি, মামামামীরা অলকাবৌদি , অশোকদা, মাসতুতো ভাইয়েরা -- অনেকেই । প্রত্যেকবার ভাবি এবার একটু সময় নিয়ে সবার সাথে চোখের দেখাটা সেরে যাবো । কিন্তু কোনবারই সম্ভব হয়ে ওঠে না । এবারেও সেই সুযোগ নেই মনে হচ্ছে । প্রথম দিনটি ওভাবেই কেটে গেল । পরদিন সকালে মেট্রোতে চেপে সোজা হেমন্ত বসু সরণিতে হেড অফিস । দিনভর শুধু কাজ আর কাজ , আর তারই ফাঁকে ফাঁকে অফিসের এই ফ্লোরে ওই ফ্লোরে পরিচিতদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত । দীর্ঘদিন চাকুরীতে থাকার সুবাদে অনেকের সাথেই পরিচয়। তাছাড়া ইদানিংকালে উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে বেশ কিছু লোক বদলি হয়ে এসেছেন হেড অফিসে । বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়শঃই টেলিফোনে কথা হয়। সৌজন্য সাক্ষাতটা সেই সম্পর্কে গভীরতা আনে, তাই ব্যস্ততার মধ্যেও ওই কাজটাও জরুরি ।
কলকাতাতে আমার এক ভাগ্নিও থাকে, অমৃতা, আমাদের ব্যাঙ্কেই কাজ করে । ওর বর সান্তনু, সে আবার হেড অফিসে । আমার হেড অফিসে অধিকাংশ কাজই ওর ডিপার্টমেন্টে। এতগুলো কথা বলার কারণ একটাই, প্রত্যেকেই আশা রাখেন আমি কিছুটা সময় ওদের জন্যেও বরাদ্দ রাখবো, কিন্তু সম্ভব হয় না । প্রত্যককেই কিছু না কিছু একটা  অজুহাত দেখিয়ে পাশ কাটাই, শুধু পারিনা এই একটা জায়গাতে । ওরা স্বামী স্ত্রী মিলে এমনভাবে বলে , এড়ানো যায় না । অন্তত আমি পারিনা । এবারো সেই এক বায়না -- একটু সময়ের জন্য হলেও দেখে যাও,  কেমন আছি ইত্যাদি । দেখা করতে আমার  আপত্তি নেই, সমস্যাটা  অন্য জায়গাতে । আমি যেখানে থাকি তার সবচেয়ে কাছের মেট্রো স্টেশন হচ্ছে দমদম। ওখান থেকে সাতটা স্টেশন টপকে চাঁদনি নেমে হেটে যেতে হয় হেড অফিস। এবারে ওরা যেখানে থাকে মানে যদি অমৃতাদের বাড়ি যেতে হয় তবে আমাকে চাঁদনি থেকে উল্টো দিকে আটটা স্টেশন টপকে রবীন্দ্র সরোবরে নেমে ওখান থেকে অটোতে লর্ডস মোড় যেতে হবে , অনেকটা পথ। কলকাতা সম্পর্কে যাদের ন্যুনতম ধারণা আছে তারা দুরত্বটা অনুমান করতে পারছেন নিশ্চয়ই । কিন্তু উপায় নেই, যে ভাবে বলে, পাশ কাটানো অসম্ভব । অগত্যা রাজী হলাম, অফিস শেষে একবার যাবো । কিন্তু কাজ শেষ হতে হতেই আটটা বেজে গেল । এই সময়ে রওয়ানা দেওয়া মানে পৌছাতে পৌছাতে নটা বেজে যাবে । বোঝানোর চেষ্টা করলাম, খারাপও লাগে, বেচারা আমার জন্যে এতটা সময় অফিসে অপেক্ষা করে বসে আছে , বললাম চল । ওদের বাড়িতে যখন পৌঁছেছি তখন স্বভাবতই নয়টা বাজে । আমাকে পেয়ে মেয়েতো প্রচন্ড খুশি । থেকে যেতে, খেয়ে যেতে ইত্যাদি নানা ধরনের অনুরোধ। আমি যথারীতি ওগুলো কাটিয়ে যখন বেরিয়েছি , ঘড়িতে তখন দশটা বেজে গেছে । ছাড়তে চায় না, এটা খাও ওটা খেয়ে দেখো, নানা বায়না । শেষমেশ সাড়ে দশটার লাস্ট মেট্রোর দোহাই দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম । থেংস গড, তখনও লাস্ট মেট্রোতে চলে যায় নি । টিকিট কেটে যখন প্লাটফর্মে এসেছি তখন লোকজন নেই বললেই চলে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বড়জোর দশজন । নেক্সট মেট্রোটি আসতে বাকি আছে । মাঝামাঝি একটা জায়গাতে বসে প্রথমেই মাসতুতো বোনকে ফোনে জানিয়ে দিলাম আমি রবীন্দ্র সরবোর মেট্রো স্টেশনে আছি, ফিরতে একটু সময় লাগবে । তারপর বাড়িতে একটা ফোন করে নিলাম । আমি যখন ফোন করছি , লক্ষ্য করলাম , আমি যে ব্রেঞ্চে বসা সেটাতেই একটু দূরত্বে একজন মাঝারি বয়েসের ভদ্রমহিলা এসে বসেছেন । প্লাটফর্মে লোকজন খুব কম, তাই হয়তো নিরাপত্তাজনিত কারণেই বোধকরি একা বসতে সাহস পাচ্ছিলেন না । আমি টেলিফোনে কথা বলতে বলতে মনে হলো, উনি আড়চোখে আমাকে দেখছেন । মনে মনে হাসলাম । হয়তো বিশ্বাস করতে পারছেন না ।মানুষের সবচেয়ে বড় ভয়তো মানুষকে ঘিরে । আমি বিশেষ গুরুত্ব দিলাম না । নির্জন প্লাটফর্মে বসে আছি, অদুরেই একজন অপরূপা না হোক মোটামুটি সুন্দরী মহিলা বসা , অনেস্টলি বলছি, নিজের চোখকে আমি অতটা শাসন করতে পারছিলাম না । চোখাচোখি হতেই  ভদ্রমহিলা সৌজন্যের হাসি হাসলেন । আমি একটু প্রশ্রয় পেলাম ।
--- বাড়ি কোথায়?
--- আসামে ।
-- আসামে কোথায় ? 
---  শিলচরে ।
--- শিলচরে কোথায় ?
মনে মনে ভাবলাম অচেনা কোন ভদ্রমহিলাকে নিজের এতটা তথ্য বলাটা কি ঠিক হচ্ছে? ইচ্ছে করেই একটু ভুল ঠিকানা দিলাম । বললাম, তারাপুর, স্টেশনের পাশে ।
--- আমার একজন পিসী থাকেন শিলচরে, প্রেমতলায়।
--- প্রেমতলায় ? চমকে উঠলাম । প্রেমতলাতে যে আমার বাড়ি । আমি ইচ্ছে করে মিথ্যে বলেছি ।
--- প্রেমতলা কোথায় বলুন তো?
--- সেতো বলতে পারবো না । শুধু নামটা বলতে পারি রুমনা দে। আমরা বুবুপিসী ডাকি। হাজবেন্ড বোধকরি ওখানকার নামকরা প্রমোটার।
--- রুমনাবৌদি ?
--- সেকি চেনেন নাকি?  
এইরে এই বুঝি ধরা পরে গেলাম । ততক্ষণাৎ নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, হ্যাঁ, চিনি মানে সেই সামনাসামনি কোন পরিচয় নেই ।
-- তাই ? কিন্তু আপনার কথাতে অন্য কিছু মনে হচ্ছিল ।
নিজেকে সামলে নিলাম, এবার থেকে হিসাব করে মিথ্যে কথা বলতে হবে।
--- এখানে কোথায় থাকা হয়?
--- নাগেরবাজার মতিঝিল ।
--- আমি ছাতাকল ।
--- সেটা কোথায়?
--- আপনার ওদিকেই, অটোতে এক স্টপেজ আগে।
চমকে উঠলাম, মেয়েটি মিথ্যে বলছে নাতো?  সব কিছু এত পাশাপাশি হয়ে যাচ্ছে কেন?  কোন  চক্রে ফেসে যাচ্ছি নাতো ? ভেতরে ভেতরে একটা একটা অশান্তি আবার ভদ্রমহিলার সান্নিধ্যটা উপভোগ করার লোভও হচ্ছিল । মেট্রোটি এত দেরি করছে কেন?
টুকরো টুকরো কথা চলতে লাগলো । আলাপচারিতাতে ভদ্রমহিলাকে মন্দ মনে হলো না । বরং আন্তরিকই মনে হলো, কোন ভ্যানিটি নেই।
কথা চলতে চলতেই একটা মেট্রো আসার শব্দ  শোনা গেল । বললাম,  চলুন এসে গেছে ।
--- এটা ছেড়ে দিন, পরেরটাতে যাবো । এটা ননএসি ।
--- আপনি না দেখেই বলে দিলেন?
--- আমি রোজকার যাত্রী । ভদ্রমহিলা হেসে বললেন ।
--- কিন্তু তাতে যে অনেক দেরি হয়ে যাবে,  এমনিতেই ---।
--- প্লীজ, সারাদিন কাজের শেষে শরীরটা একটু আরাম চায় । বেশি দেরি হবে না । খুব বেশি তো পাঁচ মিনিট । প্লিজ ---।
ভদ্রমহিলা এমনভাবে বলেন যে চট করে না করাই কষ্ট ।তাছাড়া উনার কথায় একটা সম্মোহনী আছে । ভেতরে ভেতরে দোটানা ভাব থাকলেও চলে যেতে মন চাইছিল না । বললাম, ঠিক আছে, কিন্তু পরেরটা ননএসি হলেও আর দেরি করা চলবে না ।
--- ডান।
লক্ষ্য করলাম সত্যি সত্যিই এটা ননএসি । আমার চোখের সামনেই সবাই চলে গেল । এই মুহূর্তে আমি আর ভদ্রমহিলা একা প্লাটফর্মে । টুকটাক কথা চলছে । ততক্ষণে আমরা  শালীনতা বজায় রেখে অনেকটাই সান্নিধ্যে চলে এসেছি । কথাবার্তায় প্রাথমিক সংকোচতা অনেকখানি কেটে গেছে । টুকটাক হাসি ঠাট্টাও চলছে । বললাম, এবার যদি আর মেট্রো না আসে ?
ভদ্রমহিলা মুচকি হাসলেন, বললেন, থেকে যাবো এখানেই ।
--- একা থাকতে ভয় করবে না?
--- একা কোথায়? আপনিতো আছেন ।
--- কিন্তু বাড়িতে?
--- ফোন করে বলে দেবো, কাজের জায়গাতে আটকে গেছি ।
--- আর আমি  ?
--- আপনিও কিছু একটা বলে দেবেন । আপত্তি আছে?
আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, নাঃ।
--- লোকে এটাকে ভুতুড়ে স্টেশন বলে জানেন তো ?
বললাম, শুনেছি।
--- ভয় করে না ?
হাসলাম । বললাম, আমি ভুত বিশ্বাস করি না ।
ভদ্রমহিলা সশব্দে হেসে উঠলেন, তাই ? আমি কিন্তু আপনার মতো এতো সাহসী নই। তারপর একটু থেমে বললেন, ভগবান যদি থাকতে পারেন ভুত থাকবে না কেন?
উত্তরে আমি মুচকি হাসলাম । মনে মনে বললাম আমাকে তো সত্যি সত্যি ভুতে পেয়েছে সুন্দরী, নইলে ঘর ভরা সংসার রেখে তোমার সাথে এতরাতে ....।
--- কিছু বললেন  ?
বললাম, নাতো ।
--- চলুন এসে গেছে । সত্যি মেট্রো আসার শব্দ শোনা গেল ।
আমি উঠে দাঁড়াতেই ভদ্রমহিলা আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন । এই প্রথম লক্ষ্য করলাম ভদ্রমহিলার একটা পা আর্টিফিশিয়াল। আমি লক্ষ্য করেছি  বুঝতে পেরে উনি মুচকি হেসে বললেন, দিস ইজ লাইফ।
আশ্চর্য এতক্ষণ ভদ্রমহিলা এই বিষয়ে একটা শব্দ খরচ করেন নি। নিজের যন্ত্রণাকে নিজের মধ্যে চেপে রেখে দিব্যি গল্প করে গেলেন । মনে মনে শ্রদ্ধা হলো । জীবনটাতো দুঃখ ফেরী করার জন্য নয়, উপভোগ করার জন্য। আমাদের ওদিককার মেয়েরা এখনও এই ব্যাপারে অনেক পিছিয়ে।
আমি উনার হাতটা ধরে ধীরে ধীরে  পজিশন নিলাম । লক্ষ্য করলাম, আমরাই শুধু যাত্রী না, আরো কিছু লোক বিভিন্ন জায়গাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন । দেখতে দেখতে মেট্রো এসে গেল । আমি হাত ধরে সাবধানে উনাকে তুলে দিয়ে যে মুহূর্তে নিজে পা বাড়িয়েছি , অমনি পেছন থেকে কেউ একজন আমার কলারটা টেনে ধরলো । ভদ্রমহিলা ততক্ষণে ভিতরে গিয়ে একটা সীটে বসতে চলেছেন, আমি দরজা থেকে ছিটকে প্লাটফর্মের মাঝখানে গিয়ে পড়েছি । আমার চোখের সামনে সব যাত্রীরা নি মেট্রোতে চড়ে বসছে। একমাত্র আমি বাইরে থেকে গেলাম ।আমি  চিৎকার করে সবার নজর কাড়তে চেষ্টা করলাম, কিন্তু কারো কোন ভ্রুক্ষেপ নেই । আমার  চিৎকার সমস্ত প্লাটফর্মে প্রতিধ্বনিত হতে লাগল । ধীরে ধীরে
মেট্রোর দরজা বন্ধ হয়ে আসছে । সেই ভদ্রমহিলাকে নিয়ে চোখের সামনে দিয়ে  মেট্রো রেল চলে যাচ্ছে । বুঝে গেছি খুব বিপদে ফেসে গেছি । এবারে সর্বস্ব খোয়াবার পালা। প্রাণে বাঁচলেই হয়। মুহূর্তে নিজের করণীয় কি ঠিক করে নিলাম । ঠিক যেখানে পড়েছি , ওখানেই নিমেষে ঘুরে কলার ধরে থাকা লোকটার মুখে টেনে একটা ঘুষি দিলাম । আচমকা এই ঘুষির জন্য লোকটা প্রস্তুত ছিল না । হাতের মুঠো হালকা হতেই আমি উঠে ছুটলাম মেট্রোর দিকে। ভাবনাটা ছিল যদি কিছু একটা ধরে ঝুলে যাওয়া যায় তবে অন্তত এদের হাত থেকে বাঁচা যাবে । মাথা কাজ করছিল না । কিন্তু সেটাও সম্ভব হলো না । কয়েকটা লোক আমাকে ঝাপটে ধরে আটকে দিল। তারপর যা হয়, একচোট মার মানে কয়েকটা বিরাশি দশ আনা ওজনের চড় থাপ্পর । আমি একা অসহায় কিছু করার নেই । চোখের সামনে দেখতে দেখতে মেট্রোর  দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল। আমার কিছুই করার ছিল না । যে লোকটাকে আমি ঘুষি মেরেছিলাম, ওই বেশি মারলে । আমি বুঝতে পারছিলাম না, ওরা আমাকে নিয়ে কি করতে চায় । অল্প পরে একজন পুলিশ অফিসার এলেন । আমাকে মেট্রো অফিসে নিয়ে যাওয়া হলো । তারপর শুরু ইন্টারগেশন ।
-- কি নাম? বললাম ।
-- কোথায় থাকা হয়?  সব বললাম ।
--- কেন মরতে চাইছিলেন?
--- কে ? আমি? এবার  আমার অবাক হবার পালা । এতরাতে আমার সাথে এসব কি হচ্ছে?  সব খুলে বললাম । ওরা শুনলেন । প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইছিলেন না । পরে আমাকে বসিয়ে সি সি টিভি ফুটেজ দেখা হলো । পরিষ্কার দেখলাম প্লাটফর্মে আমি একা একা পাশে কাউকে উদ্দেশ্য করে কথা বলে চলেছি, অথচ আমার আশেপাশে কেউ নেই । আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে । নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না। জলজ্যান্ত মহিলাটিকে সিসি টিভি ধরতে পারছে না । আমার চোখে এখনও ভদ্রমহিলার চেহারাটা ভেসে আছে। অথচ সিসি টিভি .....। আমার শরীরটা ঝিমঝিম করছে । কোনটা সত্যি বুঝতে পারছি না, একটু আগের সবকিছু নাকি এখন যা ঘটে চলছে । শরীরটারে ঘাম হচ্ছে মনে হলো ।
--- এই যাত্রায় বেঁচে গেলেন । অচেনা জায়গাতে এত রাতে চলাফেরা করবেন না ।
আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় । মাথাটা ভারী হয়ে এসেছে ।
ওরাই আমাকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিলেন । যখন বাড়ি পৌঁছেছি ঘড়িতে তখন বারোটা দশ। বোন বোনের বরের মুখ ভার ।কেউ মুখে কিছু বললো না । আমিও খেয়ে এসেছি বলে চুপচাপ শুয়ে পড়লাম । কাউকে কিছু বললাম না ভয়ে ।
ঘুম ভাঙ্গতেই  নিঃশব্দে বিদায় নিয়ে শিলচর ফিরে এলাম ।

সুপ্রদীপ দত্তরায়

Comments