হে অগ্রজ

হে অগ্রজ

তুমি তো চলে গেলে ,
কিছু কথা শুধু থেকে গেল বাকি।

যে পথে তোমার চলা,
আঁকা বাঁকা ভঙ্গুর, সহজ তো নয় ;
তবুও চলেছিলে একা, স্থির নিশ্চিত
কিছু এক ভাবনা ছিল নিশ্চয়ই ।
যত কাঁটা বিঁধেছে পায়ে
অভিজ্ঞতার নিপুণ হাতে
রেখেছো সরায়ে , দুর ঠিকানায়
পাছে রক্ত ঝরে কারো কঠিন বালুকায় ।
কি চেয়েছিলে রাজন, সমাজের কাছে?
হ্যাঁ , রাজাই তো বটে । তোমার ব্যক্তিত্ব
তোমার নেতৃত্ব , দূরদর্শী চোখ,
অন্যায়ের প্রতিবাদে দৃঢ় রোখ --
তোমাকেই মানাতো সব ।
এই যে পৃথিবীটাকে দেখতে তুমি ,
এমন দৃষ্টি আর ছিল না যে কারো ।
যারা বুঝতে শিখেছে তোমায়,
পায়ে পা মিলিয়েছে তোমার ।
তোমার আদর্শ, তোমার সরলতা
তোমার জীবনের প্রতিটি পাতা,
শুধুই স্বচ্ছতা । মানুষকে কাছে টানার
সম্মোহনী শক্তি ছিল তোমার ।
আজ যাত্রার যেখানে যতি টানলে ,
আমি অবাক হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে ।
ভাবি , কি অসীম ছিল তোমার জীবনীশক্তি ।
ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর সভা সমিতি, অনুষ্ঠানে
তোমার উপস্থিতি ছিল সভার অলঙ্কার ।
চাওয়া পাওয়ার অঙ্কটা তো শুভঙ্করী ধাঁধা
কি পেলে, কি পেলে না; সে তোমার জন্য নয় ।
তোমার স্থান উর্ধ্বে সবার।
শবযাত্রায় পায়ে পা, ঠেলে দিতে দিতে
একটা উপলব্ধি নাড়া দেয় বারবার ,
কারা এলো , কারা এলো না -- তুচ্ছ ব্যাপার
পাওয়া না পাওয়া তো সেই শকটেই শেষ
যে আদর্শের ঝান্ডা তুমি উড়িয়ে গেছো গুণী
যাতে মিশে আছে তোমার ঘাম, ক্লান্তি, ক্লেশ
তাকে মরম দেবো , উত্তাপ দেবো
দেবো স্বপ্ন দেখার স্বাধীন অধিকার,
হে অগ্রজ, এই আমার  কঠিন অঙ্গীকার ।

সুপ্রদীপ দত্তরায়

Comments