সুন্দরী

সুন্দরী

সুন্দরী এবার তোর পালা;  তোর ঐ বরমালা,
পরাতে হবে আমাকে। তোর মত সুকন্যাকে,
যতদিন না আমার হারেমে সাজাতে পারছি,
বুকের পরে পুকুর কেটে  পদ্ম ফোঁটাতে পারছি
ততদিন দ্বিপ্রহরে ঘুমটা আমার নাহয় রইলো তোলা।
আমার হারেম যে বিবি শূন্য, তা কখনো  নয়
কিন্তু সবাই কি আর বল সুন্দরী, তোর মত হয় ?
তোর বুক কাঁপানো রূপ আমাকে পাগল করে সখি,
যখন তখন চা পেয়ালাতে তোরই ছবি দেখি
কি জানি এক বিভীষিকায় সারাক্ষণ কাঁপি
ভাবি ভাগ্য দোষে শেষবেলাতে হয় অধরা পাখি।

যেদিন থেকে ঐ রিয়াং নাচ আমার চোখে ভাসছে
অন্তরে আমার সেদিন থেকে দুন্দুভিটা বাজছে ।
আহারে, হারেমটা যে তোর অভাবে করছে খা খা ।
আমার তোকে সুন্দরী রে,  না পেলে যে চলবে না ।
তোর চলা, তোর স্পষ্ট করে  মুখের উপর বলা,
তোর আদর্শ তোর নীতি, জানিস, মনে জাগে ভীতি
তোর ত্যাগ তোর নিষ্ঠা, কিসব তন্ত্রের প্রতিষ্ঠা,
রাতদিন তোর লোকের জন্য এমন করে ভাবনা,
কি করে মেনে নিই বলতো ? বিশ্বাস কর সুন্দরী
আমার এই সাম্রাজ্য, যেখানে আমিই শেষ কথা
সেখানে তুই আমার মুখের উপর বলবি সত্যিটা
বুঝলি, মেনে নেওয়া যায় না । কি আছে রে  তোর
ছোট্ট এক শহর পরে ছোট্ট একটা পরিবার
এতটাই বেপরোয়া, তোর এতটাই সাহস অহংকার
আমার অশ্বমেধের ঘোড়ার তুই লাগাম টানতে চাস ?
তাঁকিয়ে দেখবি, কেমন জব্দ করি, তৈরি করেছি ফাঁস
তোর গলায় পরাবো আমি। তোর সমস্ত শিরার ফাঁকে
দেব অর্থের মাদকতা, উপঢৌকন, রুদ্ধ করবো শ্বাস
তোকে যে আমার চাই। চারপাশে তাকিয়ে দ্যাখ তাই
তোর গাঢ় লাল  রক্তেতে মেশাতে আফিঙের ঢেলা
আমার সমস্ত শক্তি উজার করে শুরু করেছি খেলা ।
যত আমার মহারথী, সবার জন্য একটাই গতি
তোর বাড়িতে দাঁড়িয়ে থেকে, তোর পরাজয় চাই ।
তুই তাকিয়ে দেখবি কেমন করে বাড়ির সবাইকে
কিনে নেবে আমার লোক তোর চোখের সম্মুখে ।
কেন জানিস?  তোদের ক্ষুধা আছে, খাদ্য নেই
বিবেক আছে বুদ্ধি নেই ; স্বপ্ন আছে সামর্থ্য নেই,
আর সবার উপর বিচার আছে কিন্তু সাহস নেই ।
তাই ঐ তোর মাঘি পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণ বেশে
শুষে নেবো তোর মাধুর্য অনায়াসে অক্লেশে ।

হ্যাঁ,  চন্দ্রগ্রহণ দীর্ঘসময়ের নয় ।
কিন্তু ততক্ষণে  আমি আফিঙের নেশায়
তোর কন্ঠ থেকে কেড়ে নেব প্রতিবাদের ভাষা।
যাতে তোকে দেখে আগামীতে কেউ
আওয়াজ দিতে না পারে । বলতে নারে
"বিপ্লব তুমি দীর্ঘজীবী হও"।
অন্তত আমার হারেমে তো নয়ই।

সুপ্রদীপ দত্তরায়

Comments